Buy Now
22 December 2024
Bangladesh Travel Travel Blog

হামহাম জলপ্রপাত -Humhum Waterfall

  • April 26, 2024
  • 0

হাম হাম কিংবা হামহাম বা চিতা ঝর্ণা (Humhum Waterfall) বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বন বিট এলাকায় অবস্থিত। এটি একটি প্রাকৃতিক জলপ্রপাত। বয়ে

হামহাম জলপ্রপাত -Humhum Waterfall
Hamham Waterfalls

হাম হাম কিংবা হামহাম বা চিতা ঝর্ণা (Humhum Waterfall) বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বন বিট এলাকায় অবস্থিত। এটি একটি প্রাকৃতিক জলপ্রপাত। বয়ে গেছে ঝিরিপথ । স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকে একে হাম্মাম ঝর্না বলে ডাকে, । আরো কত কি! মানুষের অন্তরালে দীর্ঘদিন অজানা থেকে গেছিলো এই জলপ্রপাত। দূর্গম ঝিরিপথ ও লোকালয়ের বেশ বাহিরে থাকার কারনে এতদিন এই জলপ্রপাতটি কারও চোখে পড়েনি। টলমলে স্বচ্ছ পানির ধারা গড়িয়ে পড়ছে শক্ত পাথরের মতো পাহাড়ের শরীর লেপটে। নির্জন, শান্ত পাহাড়ের প্রায় দেড় শ’ ফুট উঁচু থেকে আছড়ে পড়া স্রোতধারার কলকল শব্দ বয়ে যাচ্ছে সমতলে। নাম না জানা লতাপাতা, গুল্ম, বাঁশবন, বুনোফুল ও ফলের গাছ আগলে রেখেছে পরম মমতায় সৃষ্টির বিস্ময় এই ঝর্ণাটিকে। যে বুনো ঝর্ণার অপরূপ সৌন্দর্য থেকে চোখ ফেরানো যায় না সহজে।

হামহামে যাওয়ার সঠিক সময়-

শীতকালে হামহাম ঝর্না

ঝর্ণার যৌবন হলো বর্ষাকাল। সেটা যেই ঝর্ণাই হোক না কেন। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের থেকে নিচু হওয়ার ওখানকার পানি এসেও প্রচন্ড ব্যাপ্তিতে জলধারা গড়িয়ে পড়ে। শীতে তা কমে যেয়ে মাত্র একটি ঝর্ণাধারায় এসে ঠেকে।
কিন্তু শীতকালে এই বনের আলাদা রুপ আপনি দেখতে পাবেন যদি সেখানে শীতকালে যেতে চান।

হাম হাম ঝর্ণায় কিভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল যেতে হবে। ঢাকা থেকে রেল ও সড়ক পথে শ্রীমঙ্গল যাওয়া যায়। ঢাকার কমলাপুর থেকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস। দুপুর ২টায় প্রতিদিন ছাড়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস। বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ১০টায় ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস।
এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে সোমবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল সোয়া ৮টায় ছাড়ে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস। শনিবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ৯টায় ছাড়ে উদয়ন এক্সপ্রেস।
ঢাকার সায়েদাবাদ, কমলাপুর, আরামবাগ থেকে হানিফ, শ্যামলী, মামুন, ইউনিক ইত্যাদি পরিবহনে অথবা কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে সিলেটগামী ট্রেনে করে শ্রীমঙ্গল এসে নামতে হবে।
শ্রীমঙ্গল নেমে হোটেল নিয়ে নিলে ভাল করবেন। যদি রাতের গাড়ীতে আসেন তবে শ্রীমঙ্গল থেকে নাস্তা করে ৯ টার মধ্যে রওনা দিবেন। আর যদি দিনের গাড়ীতে রওনা হন তবে রাতে হোটেলে থেকে ভোরে হামহাম ঝর্ণা চলে যাবেন এবং পথে কুড়মা বাজারে নাস্তা সেরে নিবেন। শ্রীমঙ্গল হোটেলের আশেপাশে অনেক সিন.এন.জি পাবেন, আপনাকে শ্রীমঙ্গল থেকে যেতে হবে কলাবন পাড়া, ওদের হামহাম যাব বললেই হবে। আপ ডাউন ১৫০০ টাকার মতো নিবে। কলাবন পাড়া পৌছে ওখানে চা শ্রমিক রাই গাইড হিসেবে যায়, ২০০/৩০০ টাকা নিবে গাউড। গহীন এবং পাহাড়ি বনের ভেতরে প্রায় আড়াই ঘন্টা হাটতে হবে, বনের প্রায় সাড়ে ৭ কিলো ভেতরে হাম হাম। উচু পাহারে উঠতে হবে, তাই সাবধান থাকতে হবে। সাথে অবশ্যই লাঠি নিবেন ওখান থেকে, ৫ টাকা নেবে। লবন বা গুল নিবেন জোকের জন্যে। আসা যাওয়া নিয়ে প্রায় ৫ ঘন্টা হাটতে হবে।

হাম হাম ঝিরিপথে হাটার রাস্তা।

হামহামে কোথায় থাকবেন
শ্রীমঙ্গলে থাকার জন্য বর্তমানে অনেক ভালো ভালো রিসোর্ট রয়েছে। অন্যান্য থাকার জায়গার মধ্যে আছে ভিবিন্ন হোটেল ও কটেজ। এসব হোটেল ও রিসোর্টের ভাড়া ৪ শ’ টাকা থেকে ৫ হাজার ৫শ’ টাকা।
তবে হামহাম ঝর্না এলাকার আশেপাশে থাকার মতো তেমন ভালো ব্যবস্থা নেই। তবে নিজেকে যদি মানিয়ে নিতে পারেন তাহলে তৈলংবাড়ী কিংবা কলাবন পাড়াতে আদিবাসীদের ঘরে থাকতে পারেন।

কি খাবেন?
খিদে মেটানোর জন্য কলাবন পাড়ায় কিছু খাবার খেয়ে নিতে পারেন। আজকাল হাম হাম ঝর্ণা রর্ণা
পাদদেশে চা, ছোলাবুট পাওয়া যায়, যা আপনার সাময়িক খিদে নিবারন করতে সক্ষম হবে। এছাড়া
সাথে শুকনো খাবার নিয়ে যেতে পারেন। কলাবন পাড়ায় স্থানীয় মানুষদের দেওয়া একটা ছোট
হোটেল আছে। যাবার সময় অর্ডা র করে গেলে ফিরে আসার পর খেয়ে নিতে পারবেন। এছাড়া
শ্রীমঙ্গল ফিরে এসে শহরে মোটামুটি মানের রেস্টুরেন্ট আছে সেখানে ভরপেট খেয়ে নিতে
পারবেন।

হামহাম ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা-
* ট্রেকিং এর জন্যে ভালো গ্রীপের জুতো জু ব্যববার করবেন, বিশেষ করে বর্ষাকালে গেলে।
* ব্যাকপ্যাক যত সম্ভব হালকা রাখবেন।
* সাথে পর্যাপ্ত খাবার পানি রাখবেন, প্রয়োজনে সাথে করে স্যালাইন নিতে পারেন।
* ফার্স্ট এইডের জন্যে যা প্রয়োজন সাথে রাখবেন।
* সময়ের দিকে খেয়াল রাখুন যেন হামহাম থেকে ফিরে আসার পথেই সন্ধ্যা না হয়ে যায়।
একটা কথা না বললেই নয়, ঝর্ণা ও ট্রেইলে দয়া করে ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *